Thursday, March 7, 2013

স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস: যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক?

স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস: যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক?
- লেখকঃ সাইফুল রনি


বিশেষ অংশ: তারা বিজ্ঞানের কথা বলে, অথচ তারাও কিন্তু সেই একই বিশ্বাস মনে ধারনা করে বসে আছে যে, বিজ্ঞান একদিন এ ব্যাপারে প্রমান দিবে, অথচ বিশ্বাসী’রা বিশ্বাস করলে তখনই তা অজ্ঞতা হয়ে যায়। বাস্তবতা হচ্ছে, তারাও জানে বিজ্ঞান কখনো এর উত্তর দিতে পারবেনা, কারন মহাবিশ্ব সৃষ্টি’র কার্যকারন জানতে হলে আপনাকে এর অস্তিত্বের পূর্বাবস্থায় অর্থাৎ বিগ ব্যাং এর আগের অবস্থায় যেতে হবে। এখন, এটা কি কখনো সম্ভব? আপনি, যতই চেষ্টা করুন, সেরকম পরিবেশ সৃষ্টি করার, তারপরও সেটি এখনকার বিগ ব্যাং এর মিলিয়ন বছর পরের পরিবেশ বৈ আর কিছুই না। তারপরও তারা ঐ অন্ধ বিশ্বাস মনে ধারন করে আছে।

পূর্ণ আলোচনা

আসসালামুআলাইকুম,
আমি আশা করি আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ এখনও বিশ্বাসী। তারপরও দেখা যাচ্ছে, নাস্তিকতা দিনে দিনে খুবই জনপ্রিয় একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং অধিকাংশ সময় তা ফ্যাশন হিসেবেই পরিলক্ষিত হয়।( ফ্যাশনের ধারনাটি শ্রদ্ধেয় দেবব্রত ভাইয়ের থেকে ধার করা, যেটা আমি আসলে জানতাম না যে, এটাও যে একটা ফ্যাশন হতে পারে)। আবার দেখা যায়, অনেকের স্রষ্টায় বিশ্বাসও খুবই নড়বড়ে, চারপাশের এই বিশৃংখল অবস্থা দেখে। তাই এসব চিন্তা করেই এই পোস্ট।
আর একটি বিষয় বলা দরকার, শুধুমাত্র এই যুক্তির ভিত্তিতে কিন্তু আমরা মুসলমানেরা আমাদের বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করিনি। বরং আরো অনেক নিদর্শন, প্রমান ইত্যাদি রয়েছে আল্লাহ’র অস্তিত্বে বিশ্বাসের। তবে, এগুলোও সহায়ক।মৌলিক বিষয় থেকেই শুরু করা যাক। প্রথমত আমাদেরকে অবশ্যই সকল বিষয়ে যৌক্তিক এবং ন্যায়সংগত হতে হবে। যেমন, আমাদের পূর্ব-অভিজ্ঞতা, প্রমান এবং কমন সেন্স কাজে লাগাতে হবে।এখন, বাস্তবতা হচ্ছে, কোন কিছু প্রমান করার ক্ষেত্রে আমরা খুবই সীমাবদ্ধ। যেমন, কেউ যদি আপনাকে বলে যে, প্রমান কর, তুমি কোন উন্মাদ একজন বিজ্ঞানী’র টেবিলে রাখা কোন মস্তিষ্ক নও, যেখানে বিজ্ঞানীটি তোমার মস্তিস্কের বিভিন্ন জায়গায় ইলেকট্রড দিয়ে খোঁচা দিচ্ছে আর তোমার কান্ড-কারখানা দেখে হাসছে।
এটা কি কেউ প্রমান করতে পারবেন? না। মূল কথা হচ্ছে, আমরা আমাদের জীবন এরকম অসম্ভব জিনিসকে সম্ভব ধরে নিয়ে যাপন করিনা। বরং আমরা আমাদের চারপাশের এই জগৎটাকে যেভাবে দেখি, যেভাবে আমাদের অভিজ্ঞতা অর্জন করি, সেভাবেই যুক্তির ক্ষেত্রে তা কাজে লাগাই। আমরা সবসময়ই সহজ ব্যাখ্যা’র পথে যাই।এখন, আপনাকে একটা প্রশ্ন করি, আমার লেখা’র এই মন্তব্যের ঘরে যদি একজন মন্তব্য করে আর আমি তার উত্তর দিতে থাকি, তবে কখনো কি আমাদের কারো পক্ষে ইনফিনিটি সংখ্যক মন্তব্যের ঘর স্পর্শ করা সম্ভব? না। কারন, একজনের মন্তব্যের জবাবে আরেকজন ঠিকই পাল্টা মন্তব্য দিয়ে দিবে।আবার, যদি বলি, একজন মহিলা তার নিজেকে জন্ম দিয়েছে, তবে কি বিশ্বাস করবেন? আপনি নিশ্চয়ই মনে মনে আমাকে নিয়ে হাসছেন। ( এর ব্রেইনের সাইজ মনে হয় অনেক ছোট!)। অর্থাৎ এটা সম্ভব না। অথবা, যদি বলি আমার এক বন্ধু প্রেগনেন্ট, তবে অবশ্যই আপনার মাথায় একজন মহিলার কথাই মনে আসবে, নিশ্চয়ই কোন পুরুষের কথা না।
আবার, যদি বলি, আপনার গ্রেট গ্রেট গ্রেট গ্রেট ….পূর্ব-পুরুষের সন্তান ছিল, তবে নিশ্চয়ই আপনাকে তা স্বীকার করতেই হবে, অন্তত একজন সন্তান হলেও ছিল, তা না হলে আপনি নিজেই এখানে থাকতেন না। এটা নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন।
এখন, উপরোল্লিখিত ফ্যাক্টগুলো মাথায় নিয়ে, যদি আমরা এই মহাবিশ্ব নিয়ে চিন্তা করি, তবে কি পাই। দুইটি অপশন, ১। এই মহাবিশ্ব যেখানে আছে সেখানে সবসময়ই ছিল। অথবা, ২। ছিল না।এখন, আমরা যদি বলি, এই মহাবিশ্ব সবসময়ই এখানে ছিল এবং আছে, যেমনটা বার্ট্রান্ড রাসেল বলেছিল, এর মানে তবে দাঁড়ায় যে, এই মহাবিশ্বের ইনফিনিটি সংখ্যক ইতিহাস রয়েছে। অর্থাৎ মহাবিশ্বের ইতিহাসে সবসময় প্রত্যেক ঘটনার আগে একটা করে ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেটা কি সম্ভব? আমরা আগেই এই পোস্টের মন্তব্যের উদাহরন দিয়ে তা প্রমান করেছি যে, ইনফিনিটি নাম্বার বাস্তব জীবনে সম্ভব নয়, সেটা শুধুমাত্র একটি তত্ত্বগত ধারনা। আপনি একটা খুবই বড় সংখ্যা ধারনা করতে পারেন, কিন্তু ইনফিনিটি সংখ্যক কখনোই নয়। তাই, এই মহাবিশ্বের রয়েছে ইনফিনিটি সংখ্যক ইতিহাস, এই ধারনা’র কোন যৌক্তিক ভিত্তিই নেই এবং এটা একটি বোধহীন ধারনা।
সুতরাং, আমরা ধরে নিতে পারি, এই মহাবিশ্ব কোন একসময় অস্তিত্ব লাভ করেছিল, অর্থাৎ শুরু হয়েছিল। এখন, যেহেতু, মহাবিশ্ব কোন একসময় শুরু হয়েছিল এটা প্রমানিত, ( যা বিগ ব্যাংগ থিউরী দ্বারাও প্রমানিত) তখন আরো দুইটি মৌলিক প্রশ্ন এসে যায়। ১। এটা নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছিল। অথবা, ২। বাইরের কোন কিছু তাকে সৃষ্টি করেছিল।এখন, আমরা যদি বলি যে, এই মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে, তবে এর মানে হচ্ছে মহাবিশ্বের অস্তিত্ব এর আগে থেকেই ছিল এই সৃষ্টিকর্ম করার জন্য এবং একই সাথে ছিল না, কারন এটা তো এখনো সৃষ্ট হয়নি। এটা ঠিক আগের উল্লিখিত একজন মহিলার নিজেকে নিজে জন্ম দেওয়ার সাথে মিলে যায়, যা পুরোপুরি পাগলের প্রলাপ। আসলে, সত্যি কথা বলতে, এই মহাবিশ্বের কোন কিছুরই সৃষ্টি করার ক্ষমতা নেই। বরং ম্যাটার অথবা এনার্জী’র শুধুমাত্র রূপান্তর ঘটে।সুতরাং, এই সহজ যুক্তি থেকে এটা প্রমানিত যে, এই পুরো মহাবিশ্বের একজন এক্সটারনাল/বাহ্যিক স্রষ্টা রয়েছে। এটাই একমাত্র যুক্তিযুক্ত, ন্যায়সংগত, বিশ্বাসযোগ্য উত্তর, এই মৌলিক প্রশ্নের।
এখন, অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন, কিন্তু ‘বিজ্ঞান তো এখনও তা প্রমান করেনি’। যারা এ প্রশ্ন তোলেন তারা অত্যন্ত সহজ একটি জিনিস ভুলে যান যে, বিজ্ঞান শুধুমাত্র তার আয়ত্বাধীন বিষয়গুলো নিয়েই গবেষনা করতে পারে। বিজ্ঞান কখনোই বিগ ব্যাং এর আগে কি হয়েছিল তা বলতে পারবেনা, কারন তা বিজ্ঞানের সীমার বাইরে। তাছাড়া, বিজ্ঞানই কিন্তু সত্যকে জানার একমাত্র পথ নয়। (এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন। আশা করি সবাই বিষয়টি নিয়ে যার যার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অনুসারে চিন্তা করবেন।) আপনি অতি সহজেই আমার প্রেগনেন্ট বন্ধুকে মেয়ে হিসেবে ধরে নিচ্ছেন, অথচ তার কোন ডি.এন.এ টেস্ট করলেন না, বা তাকে আপনি চিনেন না এমনকি তাকে কখনো দেখেননি, কিন্তু তারপরও আপনি আপনার এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট। ঠিক তেমনি, আপনার পূর্বপুরুষদের বেলায়ও, আপনি তাদের ব্যাপারে কিছুই জানেন না, অথচ তাদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করছেন।
একইভাবে, বিজ্ঞানে’র একটি প্রতিষ্ঠিত মতবাদ হচ্ছে, যা কিছুই অস্তিত্ব লাভ করেছে, তার পেছনে একটি কার্যকরন রয়েছে।( The Law of cause and effect). এখন, যেহেতু এই মহাবিশ্বও সৃষ্টির মাধ্যমে শুরু হয়েছে, তাই এটা খুবই যৌক্তিক যে, এর পেছনেও একটি কারন রয়েছে, এবং সেটাকেই আমরা বলি স্রষ্টা।
( দয়া করে, কেউ এখন শিশুসুলভ প্রশ্ন করে বসবেন না যে, তবে স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করল। তবে এর উত্তর বা ব্যাখ্যা ইনশাল্লাহ পরে কোন এক পোস্টে দেওয়ার চেষ্টা করব। সংক্ষেপে: স্রষ্টা তার সংজ্ঞায়ই অসৃষ্ট।)তাই, স্রষ্টা’য় বিশ্বাস হচ্ছে সবকিছুর সবচেয়ে প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা এবং আমাদের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন। স্রষ্টা’র অস্তিত্বে অবিশ্বাস মানুষকে মহাবিশ্বের সৃষ্টিরহস্যে দৈব ঘটনা’র আশ্রয় নেওয়ায়। তারা বিজ্ঞানের কথা বলে, অথচ তারাও কিন্তু সেই একই বিশ্বাস মনে ধারনা করে বসে আছে যে, বিজ্ঞান একদিন এ ব্যাপারে প্রমান দিবে, অথচ বিশ্বাসী’রা বিশ্বাস করলে তখনই তা অজ্ঞতা হয়ে যায়। বাস্তবতা হচ্ছে, তারাও জানে বিজ্ঞান কখনো এর উত্তর দিতে পারবেনা, কারন মহাবিশ্ব সৃষ্টি’র কার্যকারন জানতে হলে আপনাকে এর অস্তিত্বের পূর্বাবস্থায় অর্থাৎ বিগ ব্যাং এর আগের অবস্থায় যেতে হবে। এখন, এটা কি কখনো সম্ভব? আপনি, যতই চেষ্টা করুন, সেরকম পরিবেশ সৃষ্টি করার, তারপরও সেটি এখনকার বিগ ব্যাং এর মিলিয়ন বছর পরের পরিবেশ বৈ আর কিছুই না। তারপরও তারা ঐ অন্ধ বিশ্বাস মনে ধারন করে আছে।
এ ব্যাপারে ফেসবুকের একটা স্ট্যাটাস আপনাদের সাথে শেয়ার করছি: ‎”Atheists are cute, they talk so much about proof and evidence but when you talk about their beliefs they just say “we do not know but science will find out one day”. Atheist is just another religion build on blind faith with the illusion of being logical.”
শেষ করার আগে কোরান থেকে একটি আয়াত: “নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা’ আলা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তদ্দ্বারা মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে।” (২-১৬৪)।

Inspired by A.R.Green’s book Man in the red underpant, Hamza Tzortzis, Jamshed Javed.

Wednesday, March 6, 2013

নিজের মতবাদের দুর্বলতা সম্পর্কে ডারউইনের স্বীকারোক্তি

১৮৫৯ সালে ডারউইন তার The Origin of Species by Means of Natural Selection বইটি  প্রকাশ করে। তিনি এই বইয়ে বিবর্তনের মাধ্যমে প্রজাতির উৎপত্তির ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার বইয়ে বিজ্ঞানসম্মত কোন প্রমাণ উপস্থাপন করার কোন সুযোগ তার ছিল না। তখনো কোষ আবিষ্কৃত হয়নি। সব ধরণের পরীক্ষণ চালাতো হতো আদিম অণুবীক্ষণ যন্ত্রে। প্রকৃতপক্ষেই, এ কারণেই তার পুরো বই জুড়েই পেশাদারিত্বের অভাব লক্ষ করা যায় এছাড়াও এমনসব সিদ্ধান্ত যার ভিত্তি  পরীক্ষণের বদলে ধারণা ও অনুমান।
পরবর্তিতে ডারউইন তার The Descent of Man  বইতেও একই রকম বৈজ্ঞানিক ধারণার অবতারণা করেন। দু’ বইতেই তিনি তার থিওরির দুর্বলতা ও অসংলগ্নতা স্বীকার করে নিয়ে থিওরিটির বাস্তবে সত্যে পরিণত হবার ব্যাপারে বইজুড়ে বার বার  সন্দেহ পোষণ করেন।
ব্রিটিশ শারীরবিদ এইচ এস লিপসনডারউইনের এ আশঙ্কা সম্পর্কে মন্তব্য করেন-
“ডারউইনের অরিজিন অব স্পিসিসি পড়ে আমি দেখলাম ডারেইনকে যেভাবে দেখানো হয় তিনি নিজে তার     চেয়ে অনেক কম নিশ্চিত ছিলেন। যেমন,  ‘থিওরির দুর্বলতা’ (Difficulties of the Theory) শীর্ষক অধ্যায়টি লক্ষণীয়   রকম আত্ম-সংশয়ের নিদর্শন। বিশেষ করে,  একজন শারীরতাত্বিক হিসেবে, চোখের উৎপত্তি সম্পর্কে তার মন্তব্য আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।”
ডারউইন এ ধরণের স্বীকারোক্তি আরো দিয়েছেন যেগুলো পরবর্তীতে তার ছেলে ফ্রাঙ্কিস ডারউইন এর সম্পাদনায়  Life and Letters of Charles Darwin নামে সংগৃহীত হয়েছে। ডারউইনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও তৎকালীন বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের কাছে লিখিত এসব চিঠি তার থিওরির ব্যাপারে স্বীকারোক্তিতে ভরপুর। সংশ্লিষ্ট জ্ঞানের শাখায় নিজের অজ্ঞতা প্রকাশে তার কোন জড়তা ছিল না।
ডারউইনের বক্তব্যগুলো::
আমার বইয়ের এই অংশে আসার অনেক আগেই অনেকগুলো দুর্বলতা পাঠকের সামনে আসবে। তাদের কিছু কিছু এতই মারাত্মক যে আমি এগুলো নিয়ে চিন্তা করতেও অস্বস্তিতে পড়ে যাই।
তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যার প্রফেসর Asa Gray এর কাছে লিখিত চিঠিতে তিনি বলেন
“আমি ভালো করেই জানি আমার অনুমান সত্যিকার বিজ্ঞানের চৌহদ্দির বেশ বাইরে”
E. Haeckel এর কাছে  লেখা চিঠিতে বলেন-
     “পরবর্তী ধাপসমূহে ‘অপ্রয়োজনীয় কাঠামোর বিলোপ’ বিষয়ক সমস্যাটি কি তোমাকে হতবুদ্ধি করেছে? …এ সমস্যাটি আমাকে এখনো বিমূঢ় করে রেখেছে।”
তার বন্ধু ও বিজ্ঞানী Sir Joseph Dalton Hooker এর কাছে লিখিত চিঠিতে-
          “মাঝেমাঝেই আমি সন্দেহে পড়ি যে শেষপর্যন্ত আমি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হব।…
    কখনো কখনো আমি কল্পনায় দেখি আমি আমার থিওরির দুর্বলতাগুলো দূর করেছি। কিন্তু ঈশ্বর জানেন, এটা বোধহয় অলীক চিন্তাই। …”
  ..তুমি বইট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছো, আর আমি শুধু বলতি পারি আমি আত্মহত্যার জন্যে প্রস্তুত আছি। আমি মনে করতাম এটা ঠিকভাবেই লেখা হয়েছিল, কিন্তু নতুন করে লেখার জন্যে অনেকগুলো অভাব দেখতে পাচিছ। ”
ব্রিটিশ ভূতাত্বিক Charles Lyell এর কাছে লেখায়-
“এত দূর্বোধ্য সমস্যার আলোচনা করার ভানও আমি করতে পারছি না। সবকিছুর উৎপত্তির রহস্য আমরা সমাধান করতে পারবো না। ”
ডারউইন দেখলেন যে তার থিওরির বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালোভাবে দাঁড়াচ্ছে অবস্থান্তর আকৃতি (transitional forms বা প্রজাতি থেকে প্রজাতিতে রুপান্তরের ক্ষেত্রে মধ্যবর্তী গঠন) এর অভাব। তাই তিনি ১৮৫৯ সালে তার অরিজিন অব স্পিসিস বইয়ের “থিওরির দুর্বলতা” অধ্যায়ে বলেন-
”যদি প্রজাতিসমূহ অচেতন ক্রমবিন্যাসের মাধ্যমে অন্য প্রজাতি থেকেই এসে থাকে, তাহলে কেন আমরা সর্বত্র অসংখ্য অবস্থান্তর আকৃতি দেখি না? …,যেহেতু এই থিওরির মতে অগণিত অবস্থান্তর আকৃতির অস্তিত্ব থাকা প্রয়োজন, তাহলে কেন আমরা সেগুলোকে অগণিত সংখ্যায় ভূত্বকে খুঁজে পাই না?……কেন তাহলে প্রত্যেক ভূতাত্বিক বিন্যাস (Formation)  ও প্রত্যেক শিলাস্তর এমন মধ্যবর্তী আকৃতিতে (Transitional Form) ভর্তি নয়?……ভূতত্ব নিশ্চিতভাবেই এমন সূক্ষভাবে ক্রমবিকশিত অঙ্গাণু দেখাতে পারেনি এবং এটাই সম্ভবত আমার থিওরির বিরুদ্ধে সবচেয় সুস্পষ্ট  ও জোরালো আপত্তি।”



নাস্তিকদের নৈতিক রূপ কি এসব করা???

নাস্তিকদের নৈতিক রূপ কি এসব করা??? /:):):) 

- কঠিন চিজ

 

সতর্কতাঃ
" তীব্র চেতনানুভূতি সম্পন্ন পাঠকেরা এই পোষ্ট থেকে দূরে থাকুন।"
"যারা পড়বেন তারা নিজ দায়িত্বে পড়বেন"


তাহাদের নৈতিকতা এবং রূপঃ

# সর্বপ্রথম ওনাদের সম্পর্কে যা বলা যায় তা হলো, ওনারা হলেন সবজান্তা সমশের, বিজ্ঞান শুধু ওনারাই পড়েন এবং বুঝেন। পৃথিবীর সব জ্ঞান ওনাদের দখলে। বাকী সব ধার্মিক লোকেরা হচ্ছেন গাধা। ওনারা যা বলবেন তাই ঠিক, বাকী সব ভুল।

# যদি ওনাদের জিজ্ঞেস করা হয়, "আপনাদের নৈতিকতার ভিত্তি কি?? কোন জিনিসের ভাল মন্দ কিভাবে বিচার করেন??" ওনারা জবাব দেন "ভাল মন্দ এম্নিতেই বুঝা যায়।" জবাব শুনে হেসেই মরি।

# যদি জিজ্ঞেস করা হয়, "পশ্চিমাদের মত মদ, পর্নোগ্রাফি কি আপনি সমর্থন করেন?? ঐগুলা কি ভাল নাকি মন্দ কিভাবে বুঝব??" ওনারা জবাব দেন " ওদের সমাজ আলাদা"। চিন্তা করেন নাস্তিকদের মধ্যেও আবার ভাগাভাগি আছে। আমি হেসেই মরি। ওনাদের নৈতিক চরিত্রের কোন শিকর খুজে পাওয়া যায় না।

# বাক স্বাধীনতার নামে ইচ্ছা মত যা খুশি বলবেন। বিভিন্ন্য ভাবে অন্য ধর্মের মানুষদের গালি দিবেন, উপহাস করবেন, কটুক্তি করবেন। কিন্তু কেউ যদি তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তবে সে হয়ে যায় মৌল বাদী, ঊগ্রবাদী, যদিও মৌ্লবাদীর সংজ্ঞা ওনাদের কতটুকু জানা তা ওনারাই ভাল বলতে পারবেন। তাহাদের বাক স্বাধীনতায় আমি হেসেই মরি।

# মুক্তচিন্তার নামে নারীদের নিয়ে কুরুচি পূর্ন গান, কবিতা, সাহিত্য রচনা করবেন। ফ্যাশন শো তে ছোট কাপড় পরিয়ে মেয়েদের হাটাবেন আর মজা লুটবেন, এটাই তাদের নারী অধিকার। আর অন্য কেউ যদি তার স্ত্রী বা মেয়ে কে শালীন কাপড় কথা বলেন সে হয়ে যাবে মধ্য যুগীয় বর্বর, সেকেলে মনা মানুষ, পুরুষতান্ত্রিকতা বলে খোচা দিবেন।

# ইসলামে নারীর অধিকার নিয়ে পোষ্ট বা কিছু দেখলে তারা ঊপচে পরেন কুরুচি পূর্ন মন্তব্য করার জন্য। কিন্তু অন্য ধর্মে নারীর অবস্থান নিয়ে তাদের তেমন ঊতসাহ দেখা যায় না। কারন তাদের টার্গেট পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত প্রসারমান ধর্ম ইসলাম। সামনে পেলেই হল, একটু না একটু কালি লাগাতেই হবে। [অবশ্য তারা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের কতটুকু অধিকার দিয়ে চলেন তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে]

# হিজাব রক্ষা করা যাবে না। নারী অধিকারের নামে তাদের কে বিকিনি পরতে দেয়া হবে, ছোট ছোট কাপড় পড়ে মেয়েদের সাথে পার্টিতে যাওয়া যাবে, কিন্তু তারা নিজেরা ছোট কাপড় পরবেন না। টাই স্যুট পড়ে ফিট ফাট থাকবেন। কারন হিজাব করলে তো মেয়েদের আড় চোখে দেখা যাবে না ।

# একাধিক বিয়ে করা যাবে না। বিয়ে করবেন একটি, কিন্তু বিবাহ বহির্ভূত ভাবে ১০ জনের সাথে অবৈধ ভাবে মেলা করা যাবে। সেক্ষেত্রে তাদের কোন প্রতিবাদ নেই। তসলিমা নাসরিন ও হুমায়ুন আহমেদের কথাই ধরা যাক, একজন তো নিজে কয়াটা পুরুষের সাথে কি করেছেন লিখে বেড়ান। আর আরেক জন শেষ বয়েসে এসে ছোট মেয়ের লোভ সাম্লাতে পারলেন না। এরকম আরো অনেক ঊদাহরন দেয়া সম্ভব।

# তারা জিজ্ঞেস করেন, "ইস্লামে নারীদের কেন একাধিক বিয়ের অনুমতি দেয়া হল না?" অবশ্য এক্ষেত্রে তারা তাদের নিজের স্ত্রী কে অন্য পরুষের সাথে বিয়ে দিয়ে একাধিক বিয়ের সুযোগ দিবেন কিনা?? অথবা তারা তাদের স্ত্রী বা প্রেমিকাকে অন্য পুরুষের সাথে কতটুকু মেশার সুযোগ দেন তা গবেষনার ব্যপার।

# কোন গ্রামের কোন অশিক্ষিত মুস্লিম কোন ১৪ বছরের মেয়েকে বিয়ে করলে ওনারা হৈ চৈ ফেলে দেন। ৫০ বছরের অমুস্লিম যখন ৬ বছরের বাচ্চাকে রেইপ করে [পশ্চিমা বিশ্বে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে], তখন ওনাদের ঐ রকম হৈ চৈ দেখা যায় না। এমন কি হাজার হাজার চাইল্ড পর্ণোগ্রাফির বিরুদ্ধে তাদের কোন হৈ চৈ অবস্থান দেখা যায় না।

ওনাদের সম্পর্কে অনেক কিছুই বলা যায়। আজ এতো টুকুই থাক। তবে সবাই একরকম নন। ভাল চিন্তা করেন এমনটা খুব কম।
 

Source:  http://www.somewhereinblog.net


ফেরআউনের লাশ- নাস্তিকদের জন্য জীবন্ত নিদর্শন

ফেরআউনের লাশ- নাস্তিকদের জন্য জীবন্ত নিদর্শন




পিরামিডে/যাদুঘরে যত লাশ সংরক্ষিত আছে সবগুলোই মমি করা শুধু ফেরআউনের লাশটি ব্যতীত। এটি কোন ধরণের উপাদান ব্যতীতই সংরক্ষিত আছে।

ফেরাউন তার সম্প্রদায়কে ডেকে বলল, হে আমার কওম, আমি কি মিসরের অধিপতি নই? এই নদী গুলো আমার নিয়ন্ত্রণে প্রবাহিত হয়, তোমরা কি দেখ না? {সুরা যুখরুফ, আয়াত-৫১}
আর বনী-ইসরাঈলকে আমি নীলনদ পার করিয়েছি। তারপর তাদের পশ্চাদ্ধাবন করেছে ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির উদ্দেশে। অতঃপর যখন আমি তাকে ডুবিয়ে দিলাম তখন সে বলল, এবার ঈমান আনছি তিনি ছাড়া কোন মা’বুদ/উপাস্য নেই যাঁর উপর ঈমান এনেছে বনী-ইসরাঈলরা। বস্তুতঃ আমিও তাঁরই অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত। এখন একথা বলছ! অথচ তুমি ইতিপূর্বে না-ফরমানী করছিলে। এবং পথভ্রষ্টদেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলে। অতএব আজ আমি তোমার দেহকে সংরক্ষণ এর ব্যবস্থা করব যাতে তোমার লাশ পরবর্তীতে আগমণকারীদের জন্য নিদর্শন হতে পারে। আর নিঃসন্দেহে বহু লোক আমার মহাশক্তির প্রতি লক্ষ্য করে না। {সুরা ইউনুস, আয়াত-৯০-৯৩}

ঐতিহাসিকগণ ১৮৯৮ সালে ফেরাউনের লাশ উদ্ধার করেন। যা আজ মিশরের কায়রোতে দ্যা রয়েল মমী হলে একটি কাচের সিন্দুকের মধ্যে রয়েছে। এর দৈর্ঘ ২০২ সেন্টিমিটার। ৩১১৬ বছর পানির নীচে থাকা সত্ত্বেও তার লাশে কোন পচন ধরে নি। মুহাম্মদ (স.) এর যুগের আরব জাতি ও অন্যরা মিশরীয়দের মধ্যে, ফেরাউনের পানিতে ডুবে মারা যাওয়া কিংবা তার লাশ সংরক্ষণ- এটা মুসলমান তথা সারা বিশ্বের জাতি গোষ্ঠির জন্য এক অনন্য নিদর্শন।


এখনো পৃথিবীতে এমন মানুষ আছে যারা নাকের ডগায় মৃত্যুর ঘ্রাণ পেয়ে তারপর আল্লাহকে বিশ্বাস করে কিন্তু তখন আর কী কাজ হবে।